কবে কখন শুরু হয়েছিল কাগজের ব্যবহার জানেন?

ছবি সংগৃহীত

 

ফিচার ডেস্ক  :লেখার কাজে কাগজের বিকল্প কিছুই নেই। অনেক আগে মানুষ তালপাতা বা শালপাতায় লিখত। তবে সেসব পাতা সংরক্ষণ করা বা সংগ্রহ করা বেশ কঠিন কাজ ছিল। কাগজের আবিষ্কার এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে বটে। বর্তমানে কাগজ ছাড়া পড়ালেখা, বাসের টিকিট, কিংবা অফিসের কাজ চিন্তাও করতে পারিনা। যতই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ুক না কেন সব জায়গায়, কাগজের মান একেবারেই কমেনি।

 

নিশ্চয়ই জানেন যে গাছ থেকে কাগজ তৈরি হয়। কিন্তু কাগজের এই ব্যবহার অতি প্রাচীন। প্রথমবারের মতো গাছ থেকে কাগজের মতোই একটা জিনিস বানিয়েছিল মিশরিয়রা যা প্যাপিরাস নামেই পরিচিত। এটাকে আদিকাগজও বলা যেতে পারে। প্যাপিরাসগাছের কাণ্ডের আঁশ দিয়ে দিয়ে এই আদিকাগজ বানাত তারা।

প্রায় ৫০০০ বছর আগে এর কলম দিয়ে মিশরীয়রা লিখত। প্যাপিরাস আর পেপার এক নয়। মাদুরের মতো করে নলখাগড়া সাজিয়ে চেপে তার উপর গাছের অংশ ফেলে পেপার তৈরি হত। প্রাচীন মিশরের অধিবাসীরা এসব আঁশের স্তর পানিতে ভিজিয়ে রেখে, সেটাকে চাপ দিয়ে কাগজ মতন তৈরি করে নিত। এটাই ছিল প্যাপিরাস।

 

এই প্যাপিরাসে তারা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দলিলাদি, গল্প বা ধর্মীয় বার্তা লিখতেন। তবে বর্তমানে আজকের পেপার বা কাগজের প্রস্তুতি প্রণালীর প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেছিল চিনারা। জানা যায়, প্রায় দু’হাজার বছর আগে হেম্প বা শণগাছ সিদ্ধ করে মণ্ড বানাত তারা। এর মণ্ড শুকিয়ে বানানো হত কাগজ। প্রায় ১ হাজার ৪০০ বছর আগে কাগজ তৈরির এ প্রক্রিয়া ব্যবসায়ী ও ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে ইরাক-সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পৌঁছায়।

 

মূলত কাগজের প্রচলন চীন থেকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পরে মুসলিম বিশ্বের মাধ্যমে এবং ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মধ্যযুগের ইউরোপে কাগজের উৎপাদন শুরু হয়। যেখানে সর্বপ্রথম পানি-চালিত কাগজ উৎপাদনের কাগজকল ও কলকব্জা বা মেশিন আবিষ্কার ও নির্মাণ করা হয়। বস্তুত, কাগজ শব্দটি আরবী মূলক। এছাড়া দোয়াত, কলমও এজাতীয় আরবি শব্দ। সুতরাং কাগজ শব্দটি আরবি হলেও প্রাচীন হিন্দুরাজ্য সময়ে ভারতে কাগজের ব্যবহার ছিল এমনটা মনে করা হয়।

বর্তমানে কাঠুরেরা গাছ কেটে নিয়ে আসেন কাগজ তৈরির কারখানায়। বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে সেগুলো কেটে টুকরো টুকরো করে ছোট ছোট খণ্ডে, তারপর এগুলো থেকে বানানো হয় মণ্ড। এসব গাছের কোষ প্রাচীরে থাকে সেলুলোজ নামে একধরনের জৈব যৌগ। এতে থাকা সেলুলোজের আঁশের পানি শুষে নিলেও শক্ত থাকে দীর্ঘসময়। যা কাগজ তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।   সূত্র:অডিটি সেন্ট্রাল

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» খালেদা জিয়ার সঙ্গে রাষ্ট্রদূত আনসারীর সাক্ষাৎ

» সারা দেশ অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল

» জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকীতে ৮ দিনের কর্মসূচি বিএনপির

» বিগত ১৬ বছরে দুদু ভাই একটা গণপ্রস্রাব কর্মসূচির ডাক দিলেই পারতো !: সারজিস

» বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিলেন ইশরাকের সমর্থকরা

» দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার

» উপদেষ্টাদের জন্য ২৫ গাড়ি কেনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিল সরকার

» আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে লাভ নেই: আসিফ মাহমুদ

» জামালপুরের মেলান্দহে গাঁজার গাছসহ একজন আটক

» বর্ষসেরা এসএমই ব্যাংকার অ্যাওয়ার্ড জিতলেন ব্র্যাক ব্যাংকের সৈয়দ আব্দুল মোমেন

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কবে কখন শুরু হয়েছিল কাগজের ব্যবহার জানেন?

ছবি সংগৃহীত

 

ফিচার ডেস্ক  :লেখার কাজে কাগজের বিকল্প কিছুই নেই। অনেক আগে মানুষ তালপাতা বা শালপাতায় লিখত। তবে সেসব পাতা সংরক্ষণ করা বা সংগ্রহ করা বেশ কঠিন কাজ ছিল। কাগজের আবিষ্কার এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে বটে। বর্তমানে কাগজ ছাড়া পড়ালেখা, বাসের টিকিট, কিংবা অফিসের কাজ চিন্তাও করতে পারিনা। যতই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ুক না কেন সব জায়গায়, কাগজের মান একেবারেই কমেনি।

 

নিশ্চয়ই জানেন যে গাছ থেকে কাগজ তৈরি হয়। কিন্তু কাগজের এই ব্যবহার অতি প্রাচীন। প্রথমবারের মতো গাছ থেকে কাগজের মতোই একটা জিনিস বানিয়েছিল মিশরিয়রা যা প্যাপিরাস নামেই পরিচিত। এটাকে আদিকাগজও বলা যেতে পারে। প্যাপিরাসগাছের কাণ্ডের আঁশ দিয়ে দিয়ে এই আদিকাগজ বানাত তারা।

প্রায় ৫০০০ বছর আগে এর কলম দিয়ে মিশরীয়রা লিখত। প্যাপিরাস আর পেপার এক নয়। মাদুরের মতো করে নলখাগড়া সাজিয়ে চেপে তার উপর গাছের অংশ ফেলে পেপার তৈরি হত। প্রাচীন মিশরের অধিবাসীরা এসব আঁশের স্তর পানিতে ভিজিয়ে রেখে, সেটাকে চাপ দিয়ে কাগজ মতন তৈরি করে নিত। এটাই ছিল প্যাপিরাস।

 

এই প্যাপিরাসে তারা বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় দলিলাদি, গল্প বা ধর্মীয় বার্তা লিখতেন। তবে বর্তমানে আজকের পেপার বা কাগজের প্রস্তুতি প্রণালীর প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেছিল চিনারা। জানা যায়, প্রায় দু’হাজার বছর আগে হেম্প বা শণগাছ সিদ্ধ করে মণ্ড বানাত তারা। এর মণ্ড শুকিয়ে বানানো হত কাগজ। প্রায় ১ হাজার ৪০০ বছর আগে কাগজ তৈরির এ প্রক্রিয়া ব্যবসায়ী ও ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে ইরাক-সহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পৌঁছায়।

 

মূলত কাগজের প্রচলন চীন থেকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পরে মুসলিম বিশ্বের মাধ্যমে এবং ত্রয়োদশ শতাব্দীতে মধ্যযুগের ইউরোপে কাগজের উৎপাদন শুরু হয়। যেখানে সর্বপ্রথম পানি-চালিত কাগজ উৎপাদনের কাগজকল ও কলকব্জা বা মেশিন আবিষ্কার ও নির্মাণ করা হয়। বস্তুত, কাগজ শব্দটি আরবী মূলক। এছাড়া দোয়াত, কলমও এজাতীয় আরবি শব্দ। সুতরাং কাগজ শব্দটি আরবি হলেও প্রাচীন হিন্দুরাজ্য সময়ে ভারতে কাগজের ব্যবহার ছিল এমনটা মনে করা হয়।

বর্তমানে কাঠুরেরা গাছ কেটে নিয়ে আসেন কাগজ তৈরির কারখানায়। বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে সেগুলো কেটে টুকরো টুকরো করে ছোট ছোট খণ্ডে, তারপর এগুলো থেকে বানানো হয় মণ্ড। এসব গাছের কোষ প্রাচীরে থাকে সেলুলোজ নামে একধরনের জৈব যৌগ। এতে থাকা সেলুলোজের আঁশের পানি শুষে নিলেও শক্ত থাকে দীর্ঘসময়। যা কাগজ তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।   সূত্র:অডিটি সেন্ট্রাল

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com